মালদহের সামসি এবং মুর্শিদাবাদের বহরমপুরের জনসভায় নিজের বক্তব্যে রাখতে গিয়ে গত শনিবার কংগ্রেসের সহ-সভাপতি রাহুল গান্ধী সারদাকেলেঙ্কারিতে পশ্চিমবঙ্গ সরকারের ভূমিকার কড়া সমালোচনা করেছিলেন। জবাবে উত্তর দিনাজপুরেররায়গঞ্জের জনসভায় পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় তা প্রত্যাখ্যান করেন। তবে শালীন ভাষায় নয়! মালদহে বক্তৃতা করার সময় তৃণমূল কংগ্রেস নেত্রী কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রীর উদ্দেশ্যে তুই-তোকারি করেন।
জনসভায় কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী চিদাম্বরমকে‘চিদুদা’বলে কটাক্ষ করে মমতা বলেন সারদা কেলেঙ্কারির সুত্রে তৃণমূলের কাউকে গ্রেপ্তার করা হলে চিদাম্বরমের স্ত্রী-ছেলেও রেহাই পাবেন না। তারপরই কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রীকে তুই-তোকারি করে আক্রমণ করেবসেন মুখ্যমন্ত্রী। বলেন, “চিদু দা মানে চিদাম্বরম দা, ক্ষমতা থাকলে তুই আমায় টাচ কর। তৃণমূল নেতাদের গ্রেপ্তার করবি?কাঁচকলা করবি। আমি মায়বতী,মুলায়ম নই,আমি মমতা।”
রাহুল গান্ধী অভিযোগ করেছিলেন, “২০ লাখের বেশি গরিব মানুষ সারদা দুর্নীতিতে সর্বস্বহারিয়েছেন। সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ বোর্ড অব ইনডিয়া (সেবি) ও দুর্নীতি দমন বিভাগ রাজ্য সরকারকে বারবার কড়া পদক্ষেপ নিতে বললেও গত দুইবছর ধরে মমতার সরকার কিছুই করেনি। উল্টো অভিযুক্তদের বাঁচানোর চেষ্টাহয়েছে।”
মমতা পাল্টা হানা দিয়ে বলেন পঞ্চায়েতনির্বাচনের সময় যেভাবে সারদা কেলেঙ্কারির খবর নিয়ে রাজনীতি করা হয়েছিল সেভাবেই লোকসভানির্বাচনের মাঝেও পরিকল্পিতভাবে বিষয়টিকে সামনে আনা হয়েছে। তৃণমূল নেত্রীরদাবি —সারদা থেকে এক পয়সাও নেয়নি তাঁর দল। অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থাও নেয়া হয়েছে বলেন মুখ্যমন্ত্রী। তাছাড়া কংগ্রেসের মদদেই সারদা কেলেঙ্কারি হয়েছে সিপিএমের আমলে —একথা জনসাধারণকে বোঝাতে চান তৃনমূল কংগ্রেস নেত্রী।
সিপিএমরাজ্য সম্পাদক বিমান বসু একথা মেনে নেবার পাত্র নন।তৃণমূলই সারদা নিয়ে তদন্ত এড়িয়ে যাচ্ছে বলে উনি অভিযোগ করেছেন। কলকাতা প্রেসক্লাবে শনিবার “মিট দ্য প্রেস”অনুষ্ঠানে তিনি বলেন,”আমরা প্রথম থেকেই বলে আসছি,আদালতের তত্ত্বাবধানে ঘটনার তদন্ত করুক সিবিআই। সিবিআইয়ের তদন্ত হলে কান টানলে মাথা আসবে। কিন্তুতৃণমূল নেত্রী রাজি নন। সারদা কেলেঙ্কারির সঙ্গে তাদের দলের অনেকনেতা-মন্ত্রী জড়িত বলে অভিযোগ রয়েছে। তৃণমূল সংসদ সদস্য কুণাল ঘোষের কথাকেওগুরুত্ব দেয়া হচ্ছে না। আসলে তারা কেলেঙ্কারি চাপা দিতে চান।”
ক্ষুদ্র সঞ্চয় প্রকল্পের কোটি-কোটি টাকা আত্মসাৎ করার অভিযোগেসারদার মালিক সুদীপ্ত সেন এবং রাজ্যসভায় তৃণমূল দলীয় সংসদ সদস্য কুণাল ঘোষঅনেক দিন ধরেই কারাগারে রয়েছেন। কিন্তু এখনও এনফোর্সমেন্ট অফিসাররা সুদীপ্ত সেনকে জেরা করেননি।
You must log in to post a comment.